বিএনপি ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ নিয়ে দলীয় অবস্থান শিগগিরই তুলে ধরবে। এই লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে দলটি। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিয়ে দলীয় পর্যায়ে আলোচনার জন্য বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভা আহ্বান করা হয়েছে। সেখানে আলাপ-আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে দলের অবস্থান চূড়ান্ত করা হবে। পাশাপাশি বিএনপির সঙ্গে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোর সঙ্গেও পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হবে।

জানা গেছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে এ বিষয়ে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এছাড়া দলটির সিনিয়র নেতাদের কয়েকজনের সমন্বয়ে ঘোষণাপত্র প্রণয়ন নিয়ে কাজ চলছে। ছাত্রদের জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়েও দলের এ ফোরামে আলোচনা হয়েছে।

ছাত্ররা বিএনপির কাছে ঘোষণাপত্রের যে খসড়া পাঠিয়েছে, সেটা নিয়ে দলের নেতারা আলোচনা করেছেন। সেখানে কী কী ধরনের পরিমার্জন, পরিবর্ধন আনা যায়, সেগুলো নিয়ে দলের ভেতরে কাজ চলছে। পাশাপাশি নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

এই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন নিয়ে বিএনপির প্রশ্ন থাকলেও ছাত্রদের এই উদ্যোগ সম্পূর্ণরূপে বাদ দিতে চায় না তারা। সেজন্য দলটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই ঘোষণাপত্রকে কীভাবে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়া যায়, সেটা নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থান থেকে কাজটি সম্পন্ন করতে। পাশাপাশি এই ঘোষণাপত্রের আইনি ও সম্ভাব্য সাংবিধানিক দিক নিয়েও তারা ভাবছে।

ঘোষণাপত্র নিয়ে ছাত্রদের পক্ষ থেকে বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতি বাতিলের ব্যাপারে যে কথা বলা হচ্ছে, সেটিও যুক্তিসঙ্গত নয় বলে মনে করে দলটি। বিএনপি মনে করে, মুক্তিযুদ্ধই বাংলাদেশের ভিত্তি।

এরপরে বাংলাদেশের আরও অনেক অর্জন রয়েছে। কিন্তু স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রশ্নে একাত্তর ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোনো ইতিহাস বিকৃতি কিংবা আড়াল করতে চায় না দলটি। মুক্তিযুদ্ধকে সমুন্নত রেখেই ঘোষণাপত্র তৈরি করতে হবে।

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে বিগত আওয়ামী লীগ আমলে আন্দোলনে যুগপতের শরিকদের সঙ্গেও আলোচনা করবে বিএনপি। যাতে করে সরকার চাইলে শরিকদের সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে তৈরিকৃত খসড়া সেখানে তুলে ধরতে পারে দলটি।

দল হিসেবে বিএনপি সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এমনকি জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানেও বিএনপির সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মী জেল-জুলুম-রিমান্ডের শিকার হয়েছেন। সর্বোচ্চ সংখ্যক শহীদ হয়েছেন। তাই জুলাই ঘোষণাপত্রে এসবের স্বীকৃতি থাকা উচিত।

আজকের স্থায়ী কমিটির সভায় ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করে সেটি নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা করতে চায় বিএনপি। যেমনটা এর আগে ৩১ দফা ঘোষণার ক্ষেত্রে হয়েছিল। নিজেদের ছাতার নিচে সবাইকে আনতে এবং সবার মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হলে তা গণতান্ত্রিক ও সবার গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলেও মনে করে দলটি।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল